Awas Yojana: নতুন সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রকাশ, কারা পাবেন ঘর তৈরির অনুদান ও কবে মিলবে টাকা? দেখুন

বাংলা আবাস যোজনার নতুন তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই যোজনার অধীনে কারা আর্থিক সহায়তা পাবেন, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ এসেছে। কার নাম উঠেছে তালিকায়? কারা পাবেন ঘর তৈরির টাকা? আর সেই টাকা ঠিক কবে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে—জেনে নিন বিস্তারিত।

- Author

পশ্চিমবঙ্গে গৃহহীন ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের একাধিক আবাসন প্রকল্প চালু রয়েছে, যার মধ্যে প্রধানত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PMAY), বাংলা আবাস যোজনা এবং নতুন করে চালু হওয়া বাংলার বাড়ি প্রকল্প অন্যতম। এই সমস্ত প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো যাদের নিজস্ব পাকা ঘর নেই, তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে বাসস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান করা। সাধারণত সুবিধাভোগীদের ১,২০,০০০ টাকা থেকে ১,৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত সরকারি অনুদান দেওয়া হয়, যা সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়। এই প্রকল্পগুলিতে কারা উপকৃত হচ্ছেন, কীভাবে তালিকা দেখা যায় এবং নতুন করে আবেদন করার নিয়ম কী — তা জানার আগ্রহ এখন বহু মানুষের মধ্যেই রয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমরা সেই সমস্ত তথ্য একত্রে তুলে ধরেছি, যাতে যেকোনো ব্যক্তি সহজেই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন।

বাংলা আবাস যোজনার তালিকা কিভাবে দেখবেন?

আবেদনের পর সরকারি কর্তৃপক্ষ ব্যাপক যাচাই-বাছাই করে সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় যারা নাম থাকবে, তারা এই প্রকল্পের আওতায় টাকার সুবিধা পাবেন। সাধারণত এই তালিকা অনলাইনে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত অফিস বা সরকারি ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। টাকা পাইলেই ধাপে ধাপে সুবিধাভোগীদের ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয়।

বাংলা আবাস যোজনার টাকা কারা পাবেন?

বাংলা আবাস যোজনার সুবিধাগ্রহীতা হতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়:

  • আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

  • পরিবারের বার্ষিক আয় এক লাখ টাকার নিচে হতে হবে।

  • বিপিএল (BPL) রেশন কার্ড থাকা আবশ্যক।

  • প্রকৃত বাড়ি না থাকা চাই।

  • জমির দলিল বা পর্চা অবশ্যই আবেদনের সময় জমা দিতে হবে।

  • পরিবারে যে কেউ সরকারি চাকরিতে থাকলে পাশ হবে না।

এই শর্তগুলি পূরণ করলে আবেদনকারীরা ১২০০০০ টাকার আর্থিক সহায়তা বন্দোবস্ত পাবেন।

আরও পড়ুন - AADHAAR CARD-এ বায়োমেট্রিক আপডেটে এবার বিনামূল্যে সুবিধা – কারা পাবেন এই সুযোগ?

বাংলা আবাস যোজনার আবেদনের প্রক্রিয়া

আবেদন করতে স্থানীয় পঞ্চায়েত বা বিডিও অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে। অফিস থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে যথাযথ তথ্য ও প্রয়োজনীয় নথি সহ জমা দিতে হবে। নথির মধ্যে থাকা উচিত আধার কার্ড, বিপিএল রেশন কার্ড, বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র, জমির দলিল ও স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট। আবেদন জমা দেওয়ার পর পঞ্জিকরণ ও যাচাই-বাছাই শেষে সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রকাশিত হয়।

আর্থিক সহায়তার পরিমাণ এবং কিস্তির সময়সীমা

বাংলা আবাস যোজনায় মোট ১,২০,০০০ টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়, যা তিনটি কিস্তিতে দেয়া হয়। প্রথম কিস্তি ৫০,০০০ টাকা পাওয়ার পরে টাকা একাউন্টে জমা হয়। দ্বিতীয় কিস্তি ₹৪০,০০০ টাকা ভবনের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী কয়েক মাসে প্রদান করা হবে। তৃতীয় কিস্তি বাড়ি সম্পূর্ণ হওয়ার পর ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে দেওয়া হয়। সব টাকা ব্যাঙ্ক একাউন্টে সরাসরি ট্রান্সফার করা হয়।

বাংলা আবাস যোজনার সুবিধা ও প্রভাব

এই প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ ও ছয়ল্লু অঞ্চলগুলির গৃহহীন পরিবারগুলোর জীবনের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ঝড়, বৃষ্টির সময় নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত হচ্ছে। প্রচলিত আর্থিক সমস্যা ও নগরের বাড়ি তৈরির খরচের চাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে বহু পরিবার।

আবেদনকারীদের জন্য টিপস ও সতর্কতা

আবেদনের সময় অবশ্যই সঠিক ও যাচাইযোগ্য তথ্য দিন, ভুল তথ্য দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে। পঞ্চায়েত অফিসের আপডেট ও নির্দেশনা নিয়মিত অনুসরণ করা উচিত। আবেদন করার আগে জমির দলিল ও অন্যান্য নথি ভালোভাবে প্রস্তুত রাখা জরুরি। এছাড়া, একই পরিবারের একাধিক আবেদন নিষিদ্ধ।

বাংলা আবাস যোজনার তালিকা ও টাকা কবে পাওয়া যাবে?

২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে (২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে) প্রথম কিস্তির টাকা ব্যাঙ্ক একাউন্টে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ অথবা মে মাসে বাড়ির অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হতে পারে। তৃতীয় কিস্তি বাড়ি তৈরির পর প্রদান করা হয়। পুজোর পর টাকা ছাড়ার পর নতুন আবেদনও নভেম্বর থেকে শুরু হতে পারে।

উপসংহার

বাংলা আবাস যোজনার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের দরিদ্র ও গৃহহীন মানুষের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথ সুগম হয়েছে। সঠিক যোগ্যতা ও নথিপত্র থাকলেই এই প্রকল্পের সাহায্যে নিজস্ব ঘর নির্মাণ করা সম্ভব। যারা ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন, তারা নিয়মিত তাদের আবেদন অবস্থা ও তালিকা পরীক্ষা করুন। ভবিষ্যতে নতুন আবেদনকারীরাও উপকৃত হবেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী গৃহনির্মাণের একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি হবে।

Related Articles

WB Primary TET Recruitment: পশ্চিমবঙ্গে ১৩,৪২১টি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের আবেদন শুরু হচ্ছে, জানুন বিস্তারিত

AADHAAR CARD-এ বায়োমেট্রিক আপডেটে এবার বিনামূল্যে সুবিধা – কারা পাবেন এই সুযোগ?